বৃহস্পতিবার, ২১শে আগস্ট, ২০২৫, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

মোংলা বন্দরের চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ) চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ৬০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ টনের বেশি। এই পরিকল্পনায় অনুমান করা হচ্ছে, এতে প্রায় ৯০০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজবেন্দে বন্দরে নোঙর করবে।

এমপিএর উপপরিচালক (মিডিয়া) মো. মাকরুজ্জামান জানান, গত অর্থবছর ২০২৪-২৫ সালে মোংলা বন্দরে ১ কোটি ৪ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব অর্জন হয়েছে, যা একটি রেকর্ড। এই সময় বন্দরের লাভ ছিল ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্য ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকার থেকে ২০৩.৪৯ শতাংশ বেশি।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান সামুদ্রিক কেন্দ্র হিসেবে মোংলার উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা ও পরিবর্ধন কাজ চলমান। এর মধ্যে রয়েছে কনটেইনার টার্মিনাল ব্যাপক সম্প্রসারণ, চ্যানেল খনন, শুল্ক ও বন্দরের ডিজিটালাইজেশন। এসব উদ্যোগ বন্দরকে আরও কর্মক্ষম করে তুলছে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও ভুটানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে মোংলার ভূমিকা দৃঢ় হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৮ দিন (১৭ আগস্ট পর্যন্ত) মোংলা বন্দরে ১০৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করেছে, যা প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য যোগায়। এর মধ্যে আটটি জাহাজ ৫৩৩৩২ টিইইউ কনটেইনার বহন করেছে। জুলাই মাসে বন্দরে ৪৪৫৯টি কনটেইনার হ্যান্ডেল এবং ৫১৮টি পুরনো গাড়ি আমদানি হয়েছে, এছাড়াও প্রক্রিয়াকরণ হয়েছে ৬.৫ লাখ টন পণ্য।

বর্তমানে বন্দরের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, যেখানে অন্তর্ভুক্ত চ্যানেল খনন, কনটেইনার টার্মিনাল সম্প্রসারণ, ও শুল্ক ও বন্দর কার্যক্রমের ডিজিটালাইজেশন। এগুলো আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও পরিবহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ও ভুটানে পণ্য পরিবহনে মোংলার ট্রানজিট ভূমিকা আরও জোরদার হচ্ছে।

এমপিএর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, যদি পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগানো যায়, তবে বছরে দেড় হাজারের বেশি বিদেশি জাহাজ নোঙর করবে, এক লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেল ও দুই কোটি টন পণ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব হবে। তিনি উল্লেখ করেন, এসব লক্ষ্য অর্জিত হলে দেশের বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ নতুন কর্মসংস্থান পাবে।

শিক্ষিত ও আধুনিক অবকাঠামো, দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মোংলা সর্বোচ্চ সম্ভাবনায় পৌঁছানোর লক্ষ্যেও কাজ শুরু হয়েছে। তাদের মতে, কৌশলগত অবস্থান ও সক্ষমতার কারণে মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে, যা দেশের আঞ্চলিক ও অনূপ্রেরণার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন।

বন্দর ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রমের নির্বিঘ্নতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত বৈঠক ও সমন্বয় করা হচ্ছে, এবং জাহাজ নোঙর বৃদ্ধি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন