বৃহস্পতিবার, ২১শে আগস্ট, ২০২৫, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

পাঁচ বছরে মাছের উৎপাদন দেড়গুণের বেশি বেড়েছে

পাঁচ বছরে দেশে মাছের মোট উৎপাদন এক নজরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের মাছের উৎপাদন ছিল প্রায় ৪২.৭৭ লাখ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছেছে ৫০.১৮ লাখ টনে। এটি প্রমাণ করে দেশের মাছের উৎপাদন সাত দশমিক চার১ লাখ টন বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থাৎ প্রায় দেড়গুণের বেশি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এর উদ্যোগে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এক সেমিনারে এই তথ্য প্রকাশিত হয়। গত বুধবার, রাজধানীর ফার্মগেটে কারিগরি গবেষণা কাউন্সিলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ-shShammie এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুর রউফ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআইয়ের ওর্
ঢ়তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রাকৃতিকভাবে মাছের সরবরাহের চাহিদা অনেক। আগে কেবল ৬৪ প্রজাতির মাছ ছিল, যা এখন গবেষণার ফলে ৪১ প্রজাতিতে ফিরে এসেছে।’ তিনি আরও বলেন, সারাদেশে জলাশয় চিহ্নিত করে দেশীয় মাছের প্রজাতি সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করতে হবে। জলাশয়ের সংখ্যা কমে যাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাছের সংস্থান মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, অভয়াশ্রম গড়ে তোলা ও রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অবাধ জলাশয় দিন দিন কমে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রজনন ও সংরক্ষণ কার্যক্রম বাড়াতে হবে। মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, মাছ শিকারে বিষ ও বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, কারণ এসব উপাদান মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

অতিরিক্ত, প্লাস্টিক দূষণ মাছের উপদ্রবের অন্যতম কারণ। ফরিদা আখতার বলেন, পানির অপরিশোধন ও পরিবেশের ক্ষতি এড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক সম্মেলনে বাংলাদেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, কারণ এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।

মূল প্রবন্ধে মো. মশিউর রহমান জানান, দেশে বর্তমানে ৬৬৯টি অভয়াশ্রম রয়েছে, যার মোট জমির পরিমাণ ১,১৬৯ হেক্টর। তিনি উল্লেখ করেন, গত পাঁচ বছরে মাছের উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৪১ লাখ টনে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এখন থেকে মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্ষমতায় অভয়াশ্রম ঘোষণা করতে পারবে, এজন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। এভাবে অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে মাছের সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন