শুক্রবার, ২২শে আগস্ট, ২০২৫, ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তু করে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: অ্যামনেস্টি

ফিলিস্তিনের পক্ষে সন্তুষ্টি ও সমর্থন প্রকাশে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর নজরদারি চালাতে যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্বস্ত মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এই তথ্য বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রধানত ‘প্যালানটির’ ও ‘বাবেল স্ট্রিট’ নামের দুটি এআই টুলের মাধ্যমে এই নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সান ফ্রান্সিসকো থেকে এএফপি এর এই খবর নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নথিপত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এই সফটওয়্যারগুলো দিয়ে গণ-নজরদারি চালানো, জনগণের ওপর মূল্যায়ন করা এবং সেই অনুযায়ী লক্ষ্যবস্তু করা সম্ভব। বিশেষ করে, হয়তো সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যবস্তু করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিকে।

মানবাধিকার সংস্থা এরিকা গুয়েভারা-রোসাস বলেন, ‘ফিলিস্তিনের পক্ষে মতপ্রকাশ দমন ও গণ-বহিষ্কার ও সরকারের অন্যান্য মনোভাবপ্রবণ কর্মসূচি চালাতে যুক্তরাষ্ট্র এই শক্তিশালী এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে অবাধ। এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়াও বেআইনি আটক ও গ্রেপ্তার বেড়ে যাচ্ছে এবং অভিবাসী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।’

অ্যামনেস্টির গবেষণায় আরও জানানো হয়, ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ নামে পরিচিত কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিবাসী, শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিসার পরিস্থিতি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে ঝুঁকি নিরূপণের কাজ করছে সেই সফটওয়্যারগুলো।

গুয়েভারা-রোসাস বলুন, ‘মার্কিন প্রশাসনের দমনমূলক নীতির জন্য ‘বাবেল এক্স’ ও ‘প্যালানটির’ ইমিগ্রেশন সফটওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। যদি তারা প্রমাণ করতে না পারেন যে এই প্রযুক্তির কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটছে না, তবে প্রয়োজন তাদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে নেয়া।’

অ্যামনেস্টির দাবি, এই নজরদারি ব্যবস্থার ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা খুবই বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে তিনি অনিচ্ছাকৃত বা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু মানুষের বিরুদ্ধে প্রয়োগ চালাতে পারেন।

জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প এমন অভিযোগ করে আসছেন যে, শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘উদারপন্থী’ রাজনীতির পক্ষে কাজ করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অপ্রমাণিতভাবে ‘এন্টিসেমিটিক’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে চলা সমর্থন ও আন্দোলনকে ‘ইহুদি বিরোধী’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। এই আন্দোলনের অংশ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে বিদেশি শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদের বহিষ্কারসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবন্ধকতা মূলক এই কার্যকলাপের কারণে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং বহিরাগত ছাত্র ও অধ্যাপকদের মধ্যে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন