রোহিঙ্গা সংকট সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা ও সমাধানের জন্য তিন দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন সংলাপ আজ রবিবার কক্সবাজারে শুরু হচ্ছে। এই সংলাপের মূল লক্ষ্য হলো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ সম্মেলনের জন্য কার্যকর ও বাস্তবসম্মত সুপারিশ তৈরি। ঐ সম্মেলনটি ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চ পর্যায়ের এ সংলাপটি আয়োজন করা হয়েছে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, সমাধান খুঁজতে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সহযোগিতা আরও প্রশস্ত করতে। আগামী ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত এই সংলাপের আয়োজন করা হবে কক্সবাজারের উপকূলীয় জেলার বিভিন্ন স্থানেই। এখানে বর্তমানে এক লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী জীবনযাপন করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানায়, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংলাপে অংশগ্রহণ করবেন দেশ-বিদেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শিক্ষাবিদ।
আয়োজকরা উল্লেখ করেছেন, সংলাপে রোহিঙ্গা পরিবারের পুরুষ, নারীদের পাশাপাশি যুবকদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শোনা হবে। যাতে আন্তর্জাতিক মহল তাদের প্রয়োজন, অভিযোগ ও ভবিষ্যত প্রত্যাশাগুলো সরাসরি জানতে পারে।
সংলাপে পাঁচটি মূল বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে, যথা: মানবিক সহায়তা ও তহবিলের চ্যালেঞ্জ, মিয়ানমারের রাখাইনে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, প্রত্যাবাসনে বিশ্বাস তৈরির উপায়, নৃশংসতার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা, এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই সমাধান।
এছাড়া ২৬ আগস্ট অংশীজনরা রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন এবং সরাসরি শরণার্থীদের সমস্যা ও অভিজ্ঞতা শুনবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য হলো নিউইয়র্কের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং কার্যকর সুপারিশ প্রস্তুত করা। এই সম্মেলনে আনুমানিক ১৭০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে মিয়ানমার ও অন্যান্য নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের দুর্দশা ও তাদের প্রত্যাবাসনের পথ খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে চাল dinâmica অনুসারে, মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অষ্টম বছর Countdown এবং মিয়ানমারে চলমান সহিংসতা, দুর্দশা ও আন্তর্জাতিক তহবিল হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে এই সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী দিনগুলোতে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, নিরবচ্ছিন্ন বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রাখা, আন্তর্জাতিক মহলে রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব তুলে ধরা ও তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, স্বেচ্ছাপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সহজ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমরা সচেতন, এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাব।’’
নিউইয়র্কের সম্মেলনটি বিশ্বে দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী সংকটের ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যক্রমের পরীক্ষা মঞ্চ হবে।