দেশে দীর্ঘ চার মাসের অস্থির বাজারের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই চালানের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ৯টি ট্রাকে মোট ৩১৫ মেট্রিক টন মোটা চাল দেশে প্রবেশ করে। আমদানিকারকেরা জানিয়েছেন, আরও কিছু ট্রাক ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দর থেকে অপেক্ষমাণ রয়েছে, দ্রুত চালান ছাড়ানোর ফলে বাজারে চালের সরবরাহ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং এর প্রভাবে দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে উচ্চ শুল্কহার থাকায় এখনও সামান্য হলেও আমদানির পরিমাণ محدود থাকতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, চলতি অর্থবছরে এপ্রিলের শেষ নাগাদ শেষ চাল আমদানি হয়েছিল। দীর্ঘ বিরতির পরে নতুন এই চালান বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার পর দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
আব্দুস সামাদ, মেসার্স হাজি মুসা করিম অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী, বলেন, তাদের ৯টি ট্রাক কয়েকদিন ধরেই ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে অপেক্ষা করছিল। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাকগুলো বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। এখনও আরও কিছু ট্রাক অপেক্ষমাণ রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খোলার মাধ্যমে চাল আমদানি শুরু করেছে। নতুন চালান এখনই আসতে শুরু করেছে এবং আরও কয়েকটি ট্রাক এই সপ্তাহের মধ্যে দেশে প্রবেশ করবে বলে বন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) চাল আমদানির পরিমাণ প্রায় ২,৫৮৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর এই সময়ের তুলনায় এ বছর চালের আমদানি হয়েছে মাত্র ২৫.৪ মিলিয়ন ডলার, যেখানে বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮২.৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগে দেশের বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাবে এবং দামের উপর চাপ কমবে। ব্যবসায়ীদের ধারণা, বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম প্রায় ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক শামিম হোসেন বলেন, পেট্রাপোল বন্দর থেকে ৯টি ট্রাকের মাধ্যমে মোট ৩১৫ মেট্রিক টন চাল দেশে প্রবেশ করেছে। আমরা প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়েছি যেন দ্রুত চাল বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হয়।