বৃহস্পতিবার, ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম নিয়ে আপিলের শুনানি ৪ নভেম্বর

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম বা ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বিষয়ে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আগামী ৪ নভেম্বর নির্ধারিত হয়েছে। আপিল বিভাগ আজ এই মর্মে লিভ টু অ্যাপিলের অনুমতি (মঞ্জুরি) দেন, যা এই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করে।

আদালতে রিভিউ আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে, রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও নিহাদ কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলগণ, যারা ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম। এছাড়া, শুনানির সময় ইন্টারভেনর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৬ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর, সেই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি হয়। সময়ের সাথে সাথে তা বিভিন্নভাবে সংশোধন করা হয়। তবে, এই ওয়ারেন্টের বৈধতা নিয়ে পর পর প্রশ্ন ওঠে, কারণ এর মধ্যে কিছু সাংবিধানিক পদ ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমে থাকা উল্লেখ আছে বলে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন।

হাইকোর্ট ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ওই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের অনেক অংশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করলে, ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই রায়ে পরিবর্তন আনেন। নির্দেশনাগড় পরিবর্তন করে তিন দফা নির্দেশনা দেয়া হয়: প্রথমত, সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন, তাই সাংবিধানিক পদধারীরা অগ্রাধিকার পাবেন। দ্বিতীয়ত, জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে জেলা জজ ও সমমর্যাদার ব্যক্তিরা সরকারের সচিবদের সাথে ১৬ নম্বর ক্রমে থাকবেন। তৃতীয়ত, জেলা জজদের পরেই অতিরিক্ত সচিবগণ থাকবেন।

এর পর বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন রিভিউ আবেদন করে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। একইসঙ্গে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও অন্যান্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরা এ রিভিউয়ে অংশ নেন। এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলমান থাকায় আগামী ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে অগ্রগতি হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন