সৌদি আরব, রাশিয়া ও অন্যান্য ওপেক প্লাস সদস্য দেশগুলো রোববার গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠকে বসেছে। আলোচনার মূল বিষয় হলো, অপরিশোধিত তেল উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে কি না, না হয় আগের স্তর ধরে রাখা হবে। এই সিদ্ধান্তের জন্য বহু সূত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভলান্টারি আওয়ারে, যা ৮টি তেল উৎপাদনকারী দেশের একত্রিত নাম। বর্তমানে বাজারে অতিরিক্ত তেল সরবরাহের আশংকায় ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম কমে গিয়ে ৬৫ থেকে ৭০ ডলার পর্যন্ত নেমে এসেছে। এই বছরের মধ্যে তেলের দাম মোট ১২ শতাংশ পতন ঘটেছে।
অতীতে, ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলো প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমিয়েছে। তবে সম্প্রতি, সৌদি আরব, রাশিয়া, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাজাখস্তান, আলজেরিয়া ও ওমান মিলিতভাবে জানুয়ারির শুরু থেকে বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব পুনরুদ্ধার করতে উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বছরের শেষ প্রান্তিকে সাধারণত চাহিদা কম থাকে। ফলে, যদি উৎপাদন বাড়ানো না হয়, তাহলে অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে তেলের দাম আরও চাপের মধ্যে পড়তে পারে। বাজারে গুঞ্জন চলছে, অক্টোবরের জন্য নতুন কোটার জন্য পুনর্বিন্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিও এই বিষয়ে প্রভাব ফেলছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব সভ্যতা অস্থিতিশীল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইউরোপীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, ভারতের ওপর রাশিয়ান তেলের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা তার উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, যদি রাশিয়া তার রপ্তানি সীমিত করে, তবে ওপেক প্লাসের জন্য বাজারে সুযোগ বাড়বে। তবে, ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হলে রাশিয়ার তেলের উচ্চ মূল্যে থাকাটা জরুরি, যা তাদের জন্য ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। ফলে, বড় কোটার সুযোগ কাজে লাগানো কঠিন হতে পারে।