সফল বাণিজ্য আলোচনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে, বিশেষ করে রপ্তানির ভিন্নতা এবং কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে। দেশের বেশির ভাগ পণ্যই মূলত অন্য দেশ থেকে মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি করে উৎপাদন করা হয়, এরপর মূল্য সংযোজন করে রপ্তানি করা হয়। এই বাস্তবতায় অন্য দেশের সঙ্গে দর–কষাকষি করতে আমাদের কৌশলগত সুবিধা কম। তাই আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে তিনি জোর দেন।
রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজন করা হয় ‘বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষিতে জাতীয় সক্ষমতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি ও ইউকের সহযোগিতায় অনট্টঠনাটি অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের রপ্তানিপণ্য খুব সীমিত, পণ্যবৈচিত্র্য না থাকায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রেসিপ্রোকাল ট্রেড নেগোসিয়েশনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, আমেরিকাকে কম শুল্ক আরোপে উদ্ধুদ্ধ করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়েছি, এবং সফলও হয়েছি বলে তিনি দাবি করেন। ট্রেড নেগোশিয়েটরস পুলের সদস্যরা যদি দেশের জন্য তাদের অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে টেকসই সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে চলমান প্রশিক্ষণ কার্যক্রমগুলো দিয়ে চালিয়ে যেতে হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের দর–কষাকষির ক্ষেত্রে অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা বেশ ভালো হলেও নিজেদের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়ে গেছে। দীর্ঘ আলোচনার পরেও অনেক বিষয় অমীমাংসিত থেকে যায়। সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তথ্যভিত্তিক আলোচনা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রয়োজন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে পাঠানো একটি চিঠির উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিক অ্যাডভাইজর ওয়াইস প্যারি, র্যাপিডের চেয়ার ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম খান।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
শেষে, ট্রেড নেগোশিয়েটরস পুলের সদস্যদের জন্য সংগঠিত কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়।