বিগত তিন অর্থবছর ধরে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ব্যাপক পরিমাণ ডলার বিক্রি করছিল। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তারা একটি ভিন্ন পথ গ্রহণ করছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাত দফায় মোট ৮১ কোটি ডলার বেশি কেনা সম্পন্ন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৫টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা গত মঙ্গলবার ৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের পরবর্তী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এই কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে সরাসরি বাজার থেকেই ডলার কিনছে। তাঁর মতে, বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভবিষ্যতেও এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে।
গত বৃহস্পতিবার ডলার কেনাকাটা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটির মাধ্যমে মাল্টিপল প্রাইস অকশন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। প্রতিটি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ দফায় ডলার কিনেছিল: ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১.৫০ টাকায় ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার, ১৫ জুলাই একই দরে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২৩ জুলাই ১২১.৯৫ টাকায় ১ কোটি ডলার, ৭ আগস্ট ১২১.৩৫ থেকে ১২১.৫০ টাকায় ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১০ আগস্ট ১১ টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১.৪৭ থেকে ১২১.৫০ টাকায় মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার, এবং ২ সেপ্টেম্বর ৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। আজ ৪ সেপ্টেম্বরেও ৫ ব্যাংকের কাছ থেকে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার কেনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের দাম হঠাৎ করে খুব বেশি বেড়ে যাওয়া বা খুব কমে যাওয়া দুটোই দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে দেশে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে ও বিদেশি দায় পরিশোধও সঠিকভাবে চলছে। এতে করে আশা করা যাচ্ছে, নিকট ভবিষ্যতে ডলারের তীব্র চাহিদা উঠার কোনো আশঙ্কা নেই।
তারা আরও বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ডলার ক্রয় রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি, জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসলে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে, ফলে ডলারের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে।