ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া। তবে এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের সেই হাইভোল্টেজ লড়াই শেষ হয়েছে একটি তিক্ত দৃশ্যের মাধ্যমে। দুবাইয়ে রোববার রাতে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করার পর, ভারতীয় ক্রিকেটাররা সোজা ড্রেসিংরুমে চলে যান। তখন পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা অভ্যাস মতো হাত মেলানোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু ভারতীয়দের আচরণ ছিল সম্পূর্ণ শীতল, কোনো চোখাচোখি বা হাত মেলানোর তোয়ার ছিল না। এর ফলে পাকিস্তানি সমর্থক ও ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আচরণে ভারতীয় দলটির মনোভাব ও সৌজন্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
১২৮ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৫.৫ ওভারে জয় অর্জন করে ভারত। পাকিস্তানি মিডিয়া বলছে, কেউই এই সময় মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করতে বের হননি। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও কোচরা এই আচরণকে কড়া ভাষায় বন্ধুসুলভ মানসিকতার অভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তানের প্রধান কোচ মাইক হেসন বলছেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক।’ আর শোয়েব আখতার অভিযোগ তুলেছেন, সূর্যকুমার যাদব ক্রিকেটে রাজনীতি ঢুকিয়ে দিয়েছেন।
রশিদ লতিফও মন্তব্য করেছেন, ‘তুমি বলো, তোমরা ভারতে ক্রিকেট খেলোয়ার। বিশ্বসেরা দল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হাত না মেলানোই তোমাদের আসল ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে। পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা অপেক্ষা করছিল, কিন্তু ভারতের খেলোয়াড়রা সোজা ড্রেসিংরুমে চলে গেল। এ আচরণকে বলা যায় ‘অখেলোয়াড়সুলভ’।’
অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানি সমর্থকরা এই আচরণকে ‘অখেলোয়াড়সুলভ’ না বলে কড়া সমালোচনা করছেন। এর বিপরীতে ভারতীয় সমর্থকদের ধারণা, জাতীয় আবেগের সঙ্গে একমত হলেও এই আচরণ শোভন ছিল না, এই জন্য দলটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এশিয়া কাপের আয়োজক সংস্থা এসিসি ইতিমধ্যে জানিয়েছে, ম্যাচ শেষে পাকিস্তান প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও আইসিসি এই বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়।
উল্লেখ্য, এশিয়া কাপের সব ম্যাচই আন্তর্জাতিক এবং আইসিসির নিয়মানুসার। তবে, ম্যাচ শেষে হাত মেলানো বাধ্যতামূলক নয়। আইসিসির আচরণবিধি অনুযায়ী, খেলোয়াড়রা সতীর্থ, প্রতিপক্ষ, ম্যাচ অফিসার ও আম্পায়ারদের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। কিন্তু নিয়মে কোনো লিখিত বাধ্যবাধকতা নেই যে ম্যাচ শেষে হাত মেলানো দস্তুর। অর্থাৎ, কোনও শাস্তি বা দণ্ডের বিধান নেই। তাই, এই ঘটনায় আইসিসি বড় ধরনের ব্যাখ্যা বা শাস্তি দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, একমাত্র ‘মৃদু তিরস্কার’ বা নৈতিক নির্দেশ দিতে পারে। পাশাপাশি, আইসিসির শীর্ষ পদে থাকা এক ভারতীয় কর্মকর্তা, জয় শাহ, থাকায় এই ঘটনার পর আইসিসি কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে আশঙ্কাও কম।