বুধবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২রা আশ্বিন, ১৪৩২

গাজায় জাতিগত নিধনের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রেরও সংশ্লিষ্টতা

মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক দলের দুই সিনেটর, ক্রিস ভ্যান হলেন এবং জেফরি মার্কলে, মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে, ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনীদের জাতিগতভাবে নির্মূল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে এবং এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও সহযোগিতা প্রদান করছে। এই ২১ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ইসরায়েলের কার্যক্রম দুটি মুখ্য দিকের ওপর কেন্দ্রীভূত—একটি হলো বাড়িঘর ধ্বংস করে মানুষদের ফিরে আসার কোনো স্থান যেন না থাকে এবং অন্যটি হলো খাদ্য, পানি ও ওষুধের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোর ওপর করে তাদের বঞ্চিত করা। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয় যে, দক্ষিণ গাজায় কিছু সীমিত সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও সেখানে খাদ্য সরবরাহকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এক ধরনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সিনেটররা জানান, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। পাশাপাশি বলা হয়েছে যে, গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে মোক্ষমভাবে। সিনেটররা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র এই কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, কারণ ওয়াশিংটন বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করছে। ক্রিস ভ্যান হলেন বলেন, ‘আমরা এই নিরব ভূমিকায় থাকতে পারি না, এখনই আমাদের এই সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’ অন্যদিকে, ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, গাজায় শিশুদের অপুষ্টির মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে। আগস্ট মাসে পরিচালিত স্ক্রিনিংয়ে দেখা গেছে, শিশুদের মধ্যে ১৩.৫ শতাংশ তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে, যা জুলাই মাসের তুলনায় বেশির ভাগ। বিশেষ করে গাজা সিটিতে এই হার আরও বেশি, যেখানে ১৯ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার। এ ছাড়াও, উত্তর গাজা ও গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলা ও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশের কারণে বহু হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে শিশুদের চিকিৎসা সরবরাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল সতর্ক করে বলেন, ‘গাজার প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন এখন তীব্র অপুষ্টির শিকার, যা কেবল মানবিক সংকটই নয়, বরং এক প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখেও ঠেলে দিচ্ছে।’ সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

পোস্টটি শেয়ার করুন