কিংসটাউনে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি স্মরণ করা এখনো মনে পড়ে। তখন তিনি দলে ছিলেন না, তবে সেমিফাইনালে ওঠার সংগ্রাম করা সেই ম্যাচের কাহিনী সবাই জানেন। বাংলাদেশ সেখানে হেরেছিল ৮ রানে এবং সেমিফাইনাল করাপশনের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছিল।
আজ আবার আবুধাবিতে সেই একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দেখা যেতে পারে অন্য একটি গল্প। এবার দলে ছিলেন নাসুম আহমেদ, তার সঙ্গে নতুন বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন। আর সেই ফ্যাক্টরেই ম্যাচের ফল পুরোপুরি বদলে দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ এই ম্যাচে জিতে গেছে ৮ রানের ছোট ব্যবধানে, যা নিঃসন্দেহে নাসুমের অসাধারণ পারফরম্যান্সের ফল।
অন্যদিকে, এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশের এখনও যাওয়ার আশা টিকে আছে। কালকের ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখলে বোঝা যায়, ম্যাচসেরা নাসুমের কৃতিত্বেই জিতেছে বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৭ রান সংগ্রহ করে। তার মানে হতে পারতো ২০০ প্লাসের সম্ভাবনা। তবে এরপরের ১০ ওভারে বাংলাদেশ কেবল ৬৭ রান তুলতে সক্ষম হয়, চার উইকেট হারিয়ে, যেখানে শেষ ১২ বলে ৬টি ‘ডট’ এবং রানে মাত্র ১৫। এই পরিস্থিতিতে বোঝা যায়, শেষের ব্যাটসম্যানরা খুব একটা ভালো করতে পারেননি। ডিপিআর হার আর মানসিক চাপ বেড়ে যায়।
আফগানিস্তানের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শেষ ১০ ওভারে তারা মানসিকভাবে এগিয়ে ছিল, স্কোরবোর্ডে ছিল ১৫৫ রান লক্ষ্য। যদিও এই রানটি টি-টোয়েন্টিতে দারুণ কঠিন, তবু শেষটা ভালোভাবে করতে পারলে জেতার সুযোগ ছিল।
এখানে দুর্দান্ত বোলিং করে দলের জন্য ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন নাসুম। তিনি কেবল উইকেটই নয়, খুব সাবলীল, কিপটে বলিংও করেছেন। নতুন বলের সুবিধা নিয়ে শুরু থেকেই তিনি এসোডি লক্ষ্য করে বল করেন। এজন্য প্রথম বল থেকেই উইকেটের সন্ধান পান তিনি। তার বলের শাইন্ এবং অ্যাকশনই আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল। এলবিডব্লিউর জন্য প্রথম বলটি কার্যকর হয়, এরপর বাকি বলগুলোতেও একই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন।
খেলার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস নাসুমকে নতুন বল দিয়ে উইকেটের আশায় পাঠান। প্রথম ওভারে তিনি দুর্দান্ত বল করে এক উইকেট নেন, এরপর দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৫ রান দেন। তৃতীয় ওভারে তিনি আবার ২ রানে এক উইকেট নেন, এই বার ইব্রাহিম জাদরানকে এলবিডব্লিউ করে। তার ৪ ওভার বলের বিশ্লেষণে ছিলেন ৩-১-৭-২, যা দলের জন্য এক দুর্দান্ত অবদান।
এভাবে অসাধারণ স্পেল দিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনে চাপ সৃষ্টি করেন নাসুম। তার এই কার্যক্রমই মূলত ম্যাচের ফলাফল বদলে দেয়।