বুধবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৫, ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩২

শেয়ারবাজারে ফিরছে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা

দেশের শেয়ারবাজারে অনেক দিন ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমছিল। তবে, সম্প্রতি সেপ্টেম্বরে এই পরিস্থিতিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা গেছে। মূলত, এই মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৪০টি। একই সময়ে, স্থানীয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বাড়ছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের নামে সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৪৩,৭৬১। তবে, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩,৮০১। এরমধ্যে, গত বছর আগস্টে এই সংখ্যাটি ছিল ৫৫,৫১২, যা থেকে বোঝা যায় একবছরে প্রায় ১১,৭১১টি বিও হিসাব কমে গেছে।

অন্যদিকে, দেশীয় বিনিয়োগকারীরা కూడా সেপ্টেম্বর মাসে বাজারে কিছুটা সক্রিয় হয়েছেন। আগস্টে দেশে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ১৫,৮৪,১০৪, যা বেড়ে সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৫,৯০,৬৯৫। এক মাসের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়েছে ৬,৫৯১টি। তবে, মোট বিও হিসাবের ব্যাপারে জানানো হয়েছে যে, এ বছরের শুরুতে সংখ্যাটি ছিল প্রায় ১৭,৭৩,৫৫১, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৬,৫২,২২৭। অর্থাৎ, নয় মাসে মোট ১,২১,৩২৪টি বিও হিসাব কমেছে।

বিনিয়োগকারীদের ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারী বেড়েছে ৫,৫৭৮টি, নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে ১,০৪৯টি, এবং কোম্পানি হিসাব বেড়েছে ১৯৯টি। এছাড়া, একক নামে বিও হিসাব বেড়েছে ৬,২১৯টি এবং যৌথ নামে বেড়েছে ১,৪০৮টি।

তবে, এ বৃদ্ধি সত্ত্বেও সূচকের পরিস্থিতি মোটেও উন্নতির দিকে যায়নি। ডিএসইএক্সের (DSX) প্রধান সূচক, যা এপ্রিলে ৫,৫৯৪ পয়েন্টে ছিল, সেপ্টেম্বর শেষে কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৫,৪১৫ পয়েন্টে। ফলে, এক মাসের ব্যবধানে সূচক পড়েছে ১৭৯ পয়েন্ট।

বাজারের মোট মূলধনও হ্রাস পেয়েছে। আগস্টে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বর শেষে কমে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে, অর্থাৎ ২,০৮৫ কোটি টাকা ক্ষতি।

লেনদেনের পরিমাণও নিম্নমুখী। একসময় যেখানে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হত, এখন তা কমে এসে ৬০০ কোটি টাকার ঘরে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কোনও দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকাকে স্পর্শ করেনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়া নিশ্চিতভাবে বাজারের জন্য ইতিবাচক হতে পারে, কিন্তু মৌলিক সমস্যা গুলি এখনো সমাধান হয়নি। সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের পুরোপুরি আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন