মঙ্গলবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২৫, ২২শে আশ্বিন, ১৪৩২

দেশে এডিবির প্রথম টেকসই ঋণ পেল এনভয় টেক্সটাইল

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে তাদের প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ সুবিধা হিসেবে এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের সঙ্গে ৩ কোটি ডলারের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই ঋণ পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন এবং আধুনিক উৎপাদন পদ্ধতি এগিয়ে নেবে, পাশাপাশি গার্মেন্টস খাতে নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।

বৃহস্পতিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এডিবি জানিয়েছে, এটি বাংলাদেশের জন্য এডিবির প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ। এই ধরনের ঋণ হলো ভবিষ্যৎমুখী, পারফরম্যান্সভিত্তিক ঋণ সুবিধা, যেখানে নির্ধারিত কর্মক্ষমতা সূচক এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন করা হয়।

নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানো। এই ঋণের অর্থ ব্যবহার করে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়ায় নতুন স্পিনিং ইউনিট নির্মাণ ও নকশা কাজ হবে, যা বছরে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৫০ টন সুতা উৎপাদন সক্ষমতা যোগ করবে। এই সুতা মূলত ডেনিম পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে। নতুন এই ইউনিট হবে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী। তাছাড়া, কারখানার ছাদে ৩.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর প্যানেল স্থাপন এবং স্বল্পমেয়াদী স্থানীয় কার্যকরী মূলধন ঋণ পুনঃঅর্থায়নে এই অর্থের ব্যবহার হবে।

বাংলাদেশে এডিবির দেশীয় উপস্থিতি ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ জোগান দেয়। এনভয় দেশের শীর্ষ ডেনিম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এডিবি এই প্রথমবারের মতো এনভয়কে বাংলাদেশের জন্য সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ দিচ্ছে। এটি শিল্পের পরিবেশবান্ধব ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করবে, পাশাপাশি গার্মেন্টস খাতের জন্য নতুন মানদণ্ড সৃষ্টি করবে।’

এনভয়ের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এডিবির এই ধারাবাহিক সহায়তা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এই সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ এবং পরিবেশগত প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এনভয় সবসময় মান, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের মূলনীতি অনুসরণ করে আসছে।’

বর্তমানে এনভয় বার্ষিক ৫ কোটি ৪০ লাখ গজ ডেনিম উৎপাদন করে, যা দেশের মোট উৎপাদনক্ষমতার প্রায় ১০ শতাংশ। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের প্রথম প্লাটিনাম লিড সার্টিফায়েড ডেনিম কারখানার মালিক, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত।

এই প্ল্যান্টটি ময়মনসিংহের ৪৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং একদম রপ্তানিমুখী। ২০০৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডেনিম কারখানা যেখানে রোপ ডাইং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া, এটি একটি ব্যাকওয়ার্ড ইন্টিগ্রেটেড কারখানা, যেখানে নিজস্ব স্পিনিং সুবিধা রয়েছে, যা প্রতিদিন ৭০ টন সুতা উৎপাদনে সক্ষম।

পোস্টটি শেয়ার করুন