ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রথম নারী আর্চবিশপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সারাহ মুলালি। এই ঐতিহাসিক ঘটনা ১৪০০ বছরের পুরনো চার্চের ক্ষেত্রে এক বিশাল পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। গতকাল শুক্রবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, চার্চটির শেকড় রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত। এই বিশাল ঐতিহ্যবাহী গির্জার প্রথম নারীপ্রধান হিসেবে, তিনি বিশ্বব্যাপী অ্যাঙ্গলিকান সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে বসবেন। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়, যখন বছর শুরুতেই একটি নির্যাতন কেলেঙ্কারির দায়ে পদত্যাগ করেছেন জাস্টিন ওয়েলবি। তার স্থলাভিষিক্ত নির্বাচন করতে একটি কমিটি কাজ করে এবং সারাহ মুলালির নাম প্রস্তাব করে। ব্রিটিশ রাজার অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে, রাণী ও রাজা তাকে অনুমোদন দেন, যার ফলস্বরূপ তিনি এই বিশেষ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
সারাহ মুলালি ৬৩ বছর বয়সী, তিনি চার্চের ১০৬তম আর্চবিশপ হিসেবে যোগদান করছেন। ইতিহাসে প্রথম আর্চবিশপ নিযুক্ত হন খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতকের শেষে। সাবেক নার্স-মুলালি এক বিবৃতিতে বলেন, এই নতুন দায়িত্বটি তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদিও এটি একটি বড় দায়িত্ব। তিনি শান্তি ও ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রেখে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই বিশাল ঘোষণাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, চার্চ অব ইংল্যান্ড দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এর গির্জা, ক্যাথেড্রাল, স্কুল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নতুন আর্চবিশপ জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
অ্যাংলিকান চার্চ ১৫৩০ সালে রাজা অষ্টম হেনরির রোমান ক্যাথলিক থেকে বিচ্ছেদের পর থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন হয়। বর্তমানে চার্চের প্রায় দুই কোটি যুক্তBible সদস্য রয়েছে, যদিও ২০২২ সাল অনুযায়ী নিয়মিত উপাসনায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা এক মিলিয়নের কম।
নির্বাচনের দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে, রাজা তৃতীয় চার্লস সারাহ মুলালিকে নিয়োগ দেন, যার মধ্যে ব্রিটিশ গোপন নিরাপত্তা সংস্থা এমআই৫-এর সাবেক প্রধানও অংশ নেন। এই নিয়োগের মাধ্যমে চার্চের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।
সারাহ মুলালি আগে একজন নার্স ছিলেন। ২০০০ দশকের শুরুর দিকের দিকে তিনি ইংল্যান্ডের প্রধান নার্সিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি চার্চে একটি উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ সাংস্কৃতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিভাজন সহানুভূতির সাথে গ্রহণ করা হবে।
এই ঐতিহাসিক নিয়োগের জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং রাজা তৃতীয় চার্লসের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের মধ্য দিয়ে, ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে নতুন যুগের সূচনা হলো এক অনন্য উদাহরণের মাধ্যমে।