মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২

এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ছে

প্রায় এক মাসের স্থিতিশীলতার পর আবারও বেড়ে গেছে এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এর দাম। ইউরোপে শীতের আগাম শুরু এবং ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে এই জ্বালানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। রয়টার্স ও মার্কেট স্ক্রিনার সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বরে সরবরাহের জন্য গড় মূল্য ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ ডলার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১০ ডলার ৬০ সেন্ট। ডিসেম্বরের জন্য এই গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ ডলার ২০ সেন্ট।

এফজিইর গ্যাস ও এলএনজি সাপ্লাই অ্যানালিটিকস বিভাগের পরিচালক সিয়ামাক আদিবি বলেন, “ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে, কারণ অক্টোবরের শুরুতেই শীতের ধাক্কা লাগছে। ফলে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী।” তিনি আরও যোগ করেন, “ইউরোপে গ্যাসের মজুত কম হলেও রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল থেকে সরবরাহের পরিমাণ এখনো উচ্চমাত্রায়। তবে এশিয়ার বাজারে চাহিদা এখনো তুলনামূলকভাবে কম। মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার বাজারেও মৌসুমি কারণেই চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। ফলে চলতি শীত মৌসুমে এলএনজির দিকনির্দেশনা নির্ভর করছে ইউরোপের পরিস্থিতির ওপর।”

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে নভেম্বরে এলএনজির গড় মূল্য ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ ডলার ৩৩ সেন্ট, যা নেদারল্যান্ডসের টিটিএফ ফিউচার চুক্তির তুলনায় ৬৩ সেন্ট কম। অন্যদিকে, আর্গাস এলএনজির মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ১০ ডলার ৩৬ সেন্ট এবং স্পার্ক কমোডিটিসের হিসাব অনুযায়ী তা ১০ ডলার ৩০ সেন্ট প্রতি এমএমবিটিইউ।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের আটলান্টিক এলএনজির ব্যবস্থাপক এলি ব্লেকওয়ে জানিয়েছেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রাকৃতিক উত্তোলন প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। তার ওপর, অক্টোবরের শুরুতেই ইউরোপে শীত নামায় গ্যাসের মজুত থেকে উত্তোলন বেড়ে গেছে, যা দাম আরও বাড়াচ্ছে।” তিনি আরও বলেছিলেন, “বর্তমানে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত গত বছরের তুলনায় ১১ শতাংশের বেশি কম। ফলে শীতকে সামাল দিতে ইউরোপকে তুলনামূলক বেশি দাম দিয়ে এলএনজি আমদানি করতে হতে পারে।”

অপরদিকে, আইসিআইএসের সিনিয়র এলএনজি বিশ্লেষক অ্যালেক্স ফ্রোলি মনে করেন, সেপ্টেম্বর মাসে চীনের এলএনজি আমদানি হ্রাস এবং মিসরের দুর্বল চাহিদা ইউরোপীয় বাজারের মূল্যে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে।

অন্যদিকে, স্পার্ক কমোডিটিসের বিশ্লেষক ম্যাক্স গ্লেন-ডোয়েপেল জানিয়েছেন, “বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে রপ্তানির প্রণোদনা অনেক বেশি, কারণ উত্তর-পূর্ব এশিয়ার তুলনায় ইউরোপীয় বাজারে মূল্য সুবিধা বেশি।”

এছাড়াও, এলএনজির পরিবহন খরচ কিছুটা কমে এসেছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত আটলান্টিক রুটে পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ২২ হাজার ডলার হয়েছে, আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় রুটে তা স্থির রয়েছে ২৪ হাজার ডলার।

পোস্টটি শেয়ার করুন