রবিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২

শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ধার্য ১৩ নভেম্বর

আগামী ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া বারোটায় ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই তারিখ ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, এই মামলায় প্রসিকিউশনের বক্তব্য শেষে আজই চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন ও সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে আগামী রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটররা জানান, পলাতক থাকা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যদাতাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। এখন রাষ্ট্রের পক্ষে জবাব দেওয়া হবে এবং কোনও অংশের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়।

এরপর আজ বিকেলে আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি নিজের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে খালাসের আবেদন করেন। এই তিন দিন ধরে বিচারিক প্যানেলে কলাকৌশল ও সাক্ষ্যপ্রমাণের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন চলতে থাকে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যদাতাদের জবানবন্দি ও সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে মামলার সত্যতা ও দিকটি স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হয়।

এছাড়াও, সাক্ষ্যদানকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে মন্তব্য ও তাদের ব্যাপারে ভিন্নমত ব্যক্ত করেন আইনজীবীরা। নিজের দাবী অনুযায়ী, তারা মনে করেন যে এসব সাক্ষ্যপ্রমাণ মামলার আসল রহস্য উদ্ঘাটনে প্রভাব ফেলবে না। চলমান এই প্রক্রিয়ায় আজকের দিনেও যুক্তি উপস্থাপন করেন আদালত।

প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়, তারা এই মামলাকে আরও জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে যাতে ভবিষ্যতে বিচারের সিদ্ধান্ত অনেকটাই নির্ভর করবে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যুক্তিতর্কের ওপর। এর আগেও, ১৬ অক্টোবর শেষ হয় মামলার মূল যুক্তির উপস্থাপনাখ। সেখানে প্রসিকিউটররা একাত্তরের পরবর্তী সময়ের রাজনীতি, সরকারের কার্যাবলী ও ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিশদ বিবরণ তুলে ধরেন।

অভিযোগের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ১০ জুলাই এবং এর মধ্যেই মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা সম্পন্ন হয়েছে। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে, তবে তিনি ইতিমধ্যে স্বীকারোক্তি ও সাক্ষ্য দিযেছেন। এ মামলার অভিযোগের মোট আকার ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠা, যেখানে বিভিন্ন প্রমাণ সংরক্ষিত ਹੈ।

তীব্র এই রাজনৈতিক ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের জন্য অপেক্ষা এখন শেষের দিকে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ১৩ নভেম্বর এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন