শনিবার, ২৫শে অক্টোবর, ২০২৫, ৯ই কার্তিক, ১৪৩২

সরকারি পে-স্কেল বাস্তবায়নে অর্থের উৎস দ্বিগুণ করা হচ্ছে

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতনের স্কেল বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে অর্থ বিভাগ। এই নতুন স্কেলে তারা ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। জাতীয় বেতন কমিশন এর জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে, যা আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগেই কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, চলতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায়, এই নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যেই কার্যকর হতে পারে, ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা জানুয়ারি ২০২৬ থেকে নতুন বেতন পেতে পারেন। ২৭ জুলাই গঠিত হয় জাতীয় বেতন কমিশন, যারা খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের চেষ্টা করছে। তবে এই নতুন স্কেল বাস্তবায়নে সরকারের ওপর অর্থনৈতিক চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে। নতুন কাঠামো শুধুমাত্র সরকারের ব্যয় বাড়াবে না, বরং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আয়ও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে বলে ধারণা রয়েছে। অর্থ বিভাগ সম্প্রতি পে-কমিশনকে এমন মত দিয়েছে। এর আগে, পে-কমিশনের জন্য অর্থ বিভাগ আরও জানিয়েছিলো, ২০১৫ এর পর এক দশকের বেশি সময় ধরে বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। ফলে বর্তমান বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এরই অঙ্গে অর্থ বিভাগ ঠিক করেছে, বাড়তি অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই প্রক্রিয়া কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় বেতন বৃদ্ধির হার সম্ভবত ১০০ শতাংশের কাছাকাছি হতে পারে। কারণ ২০১৫ সালের পর থেকে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ধীরে ধীরে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু জীবনযাত্রার মান বাড়তে থাকায় সবচেয়ে কম বেতনের চাকরিজীবীদের কষ্ট হচ্ছে। যদি বেতন দ্বিগুণ হয়, তবে সরকারের ব্যয়ও প্রকারান্তরে দ্বিগুণ হবে, যা অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করবে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের মধ্যেই নতুন বেতন কাঠামো গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার অপেক্ষা করবে না। এই জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে সংশোধনী আনতে হবে এবং মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে কার্যকরের প্রচেষ্টা করা হবে। অর্থ বিভাগ মনে করছে, এই নতুন বেতন কাঠামো চালুর ফলে সর্বনিম্ন বেতনপ্রাপ্ত চাকরিজীবীরা বেশি আয়কর দিতে বাধ্য হবে, ফলে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। অন্য দিকে, সরকারি কর্মচারীদের ভাড়া ও আবাসনের খরচ বাড়বে, যা থেকেও সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাড়বে।

পোস্টটি শেয়ার করুন