বুধবার, ৫ই নভেম্বর, ২০২৫, ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তাবৃক্ত পাট রপ্তানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা শুরু

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে পাটের রপ্তানিতে পরিচালিত একটি দেওয়া হয়েছে বলে পাট রপ্তানিকারকরা জানান। তারা বলেন, এর ফলে কৃষক, ব্যবসায়ী, পাট শ্রমিক ও রপ্তানিকারকেরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। একই সঙ্গে ব্যাংকের সুদ বাড়ছে, যা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। এই শর্তগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তারা, নাহলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

রোববার নারায়ণগঞ্জের বিজেএ অফিসের ৪র্থ তলার আফজাল হোসেন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন পাট ব্যবসায়ীরা। এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫ শ’ ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারক উপস্থিত ছিলেন।

সভায় দেশের শীর্ষ পাট রপ্তানিকারক ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সের কর্ণধার গণেষ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে পাট রপ্তানি চালু করে মূলত অলিখিতভাবে পাটের রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে এখনো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে জি.পি. এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) এর মাধ্যমে কেনা মালামাল রপ্তানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ১৯১০ ও ১৯১৫ সালে পাটের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছিল, কিন্তু তখন কাটুজুট পাটের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। কিন্তু এবারে এসব কাটুজুটও নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে মুক্ত রাখেনি।

তিনি আরও বলেন, ‘অতিসত্ত্বর এই শর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে পাটের বাজার অপ্রত্যাশিতভাবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা প্রতি বেল কমে যেতে পারে। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন ও জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশনের দাবি অনুযায়ী, অন্তত ৭ থেকে ৮ লাখ বেল পাট রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। কৃষক, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষায় এই শর্তাবলী অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেএএর সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন আকন্দ। সভা শেষে তিনি নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদিত হয়।

নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আলমগীর কবির উল্লেখ করেন, বর্তমানে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচাপাট ব্যবসায়ীরা গভীর সংকটে পড়েছেন। অনেকেই ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন এবং দুই মাসের মধ্যে তারা কোনওভাবেই রপ্তানি করতে পারেননি। শ্রমিকদের মজুরি দিতে দিতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা।

তিনি আরও জানান, রপ্তানি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, পাশাপাশি কৃষকরাও সমস্যায় পড়েছেন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকছেন তারা। অন্যথায়, পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতি ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য ক্ষতিকর।

এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস, ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারেক আফজাল, কার্যকরী সদস্যরা মো. ফাহাদ আহমেদ আকন্দ, শামীম আহমেদ, এস এম মনিরুজ্জামান (পলাশ), খাইরুজ্জামান, মো. কুতুবউদ্দিন, শেখ ঈমাম হোসেন, এস এম হাফিজুর রহমান, বদরুল আলম (মার্কিন), এইচ এম প্রিন্স মাহমুদ, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, মো. নূর ইসলাম, মো. আলমগীর খান, রঞ্জন কুমার দাস ও এসএম সাইফুল ইসলাম।

পোস্টটি শেয়ার করুন