শনিবার, ৮ই নভেম্বর, ২০২৫, ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২

৩০ ছক্কার ম্যাচে নাটকীয় জয় নিউজিল্যান্ডের

নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ছিল বলার মতো অবিশ্বাস্য এক যুদ্ধ। ম্যাচটিতে দুই দলই বেশ কয়েকটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছে; মোট ২৪টি চার আর ৩০টি ছক্কা মারতে সক্ষম হয়েছেন খেলোয়াড়রা। ২০৮ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড়িয়ে থাকলেও মনে হচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিশ্চিত, তারা প্রায় ম্যাচটি জেতা নিশ্চিতই করেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে নাটকীয় মোড় নিতে থাকায় শেষ বলে ব্যাটার ছক্কা না মারায় কিউইরা ৩ রানের কঠিন জয় অধিকার করে নেয়।

অকল্যান্ডে খেলাটি শুরু হবার আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টিম রবিনসন ও ডেভন কনওয়ে স্বপ্নের মতো সূচনা করেন। তারা প্রথম ৪৩ বলে যথাক্রমে ৫৫ রান যোগ করেন। তবে পরের ওভারগুলোয় তারা দ্রুত বিদায় নেন—কনওয়ে ২৪ বলে ১৬ ও রবিনসন ২৫ বলে ৩৯ রান করে আউট হন।

অপারেশন শুরু হয় এরপর দলটির অন্য ব্যাটারদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। রাচিন রবীন্দ্রর সঙ্গে ২৯ বলে ৪৮ এবং ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে ১৮ বলেই ৫৭ রান যোগ করেন মার্ক চাপম্যান। চাপম্যান ১১ রানেই থেমে গেলেও, ১৯ বলে তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি লাভ হয়। ৬টি চার ও ৭টি ছক্কায় ২৮ বলে ৭৮ রান করে আউট হন তিনি।

এরপর দলের সংগ্রহ ১৬৪ রানে থাকতেই চাপম্যানের বিদায় ঘটে। তবে এরপর দলটি ষষ্ঠ উইকেটে ১৭ বলে ৩৮ রানের ধীর ও ভারসাম্যপূর্ণ জুটিতে আবারও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার ও ড্যারিল মিচেল অবিচ্ছিন্নভাবে খেলায় থাকায় দলটি শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেটহারায় ২০৭ রান সংগ্রহ করে। মিচেল ১৪ বলে ২৮ ও স্যান্টনার ৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোস্টন চেজ ২ উইকেট নেন।

এদিকে, লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে তুলে নিয়ে প্রথম সুখকর শুরু করে নিউজিল্যান্ড। অন্য দিকে, অ্যালিক আথানাজে ও শাই হোপ জুটির কল্যাণে প্রথম ৫০ রান পেরিয়ে যায়। তবে এরপরই কাটা পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রত্যাশা; স্যান্টনার ও ইশ সোধির স্পিন জাদুতে তারা দ্রুত ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারায়। আথানাজেকে ৩৩, আকিম অগাস্টকে ৭ ও হোল্ডারকে ১৬ রানে শিকার করেন সোধি, আর হোপ ও চেজকে গুটিয়ে দেন স্যান্টনার।

শেষ সুযোগে, রোমারিও শেফার্ডকেও নিয়ে ২৪ বলে ৬২ রান যোগ করে দলকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন রোভম্যান পাওয়েল। শেফার্ড যখন ফিরে যান, তখন দলের হাতে ছিল ৩ উইকেট এবং প্রয়োজন ছিল ১৯ বলের মধ্যে ৫৩ রান। পাওয়েল ও ফোর্ডের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ম্যাচের ভাগ্য বেশ খানিকটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে ঝুঁকে আসে।

তবে শেষ ওভারে সবকিছু বদলে যায়। কাইল জেমিসনের শেষ ওভারের প্রথম ৩ বল থেকে ১০ রান তোলে পাওয়েল ও ফোর্ড, যেখানে প্রথমে পাওয়েল আউট হন। শেষ মুহূর্তে, ৫ রান প্রয়োজন থাকলেও ফোর্ড শেষ বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি। ফলে, ক্যারিবীয় তারকারা তিন রানে হার মানতে বাধ্য হয়। পাওয়েল ১৬ বলে ৪৫, শেফার্ড ১৬ বলে ৩৪ ও ফোর্ড অপরাজিত ১৩ বলে ২৯ রান করেন। এর সঙ্গে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন নিউজিল্যান্ডের চাপম্যান।

পোস্টটি শেয়ার করুন