সোমবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চীনা বিনিয়োগে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানোর বড় সুযোগ দেখছেন সিইএএবি সভাপতি

চীনা বিনিয়োগ, নতুন প্রযুক্তি এবং শিল্প সক্ষমতার মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুত অভিমুখী রপ্তানি শিল্পে পরিণত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চীনা এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএএবি)-এর সভাপতি হান কুন। বিস্ফোরক এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন, যেখানে তাঁর উল্লেখ করেছিলেন যে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং তৈরি পোশাকসহ মূল খাতগুলোর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘদিনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে।

তাঁর মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৮ হাজার মেগাওয়াট বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে ৫৪ শতাংশই চীনা কোম্পানির। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২৭ থেকে ২৮ গিগাওয়াটে পৌঁছেছে। এই উন্নয়ন শিল্পায়ন এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

হান কুন আরও বলেন, প্রতিযোগিতামূলক শ্রম ব্যয়, উন্নত অবকাঠামো এবং কৌশলগত ভৌগোলিক সুবিধার কারণে বাংলাদেশ এখন রপ্তানিমুখী শিল্পকেন্দ্র হওয়ার জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। তিনি প্রস্তাব দেন চীন–বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিকে (এফটিএ) দ্রুত বাস্তবায়নের, যা এই রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে।

তার ধারনা, ট্যারিফ ও নীতির সমন্বয় হলে চীনা কোম্পানিগুলো উৎপাদন ক্ষেত্র বাংলাদেশে স্থানান্তর করে বিশ্ববাজারে রপ্তানি করতে পারবে। চীনের মোট উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৩০ শতাংশ এখন বিশ্বজুড়ে বিরাজমান, যার একটি অংশ বাংলাদেশে আসলে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, নীতিগত স্থিতিশীলতা ও পূর্বানুমানযোগ্যতা বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হঠাৎ নীতিতে পরিবর্তন হলে বড় বড় প্রকল্পগুলো ঝুঁকিতে পড়বে, যা বিনিয়োগের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সিইএএবির বর্তমানে প্রায় ২৫০ সদস্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এর মধ্যে অর্ধেকই অবকাঠামো খাতে এবং প্রায় ৩০ শতাংশ রিজিওনাল মার্কেট জি (আরএমজি) ও টেক্সটাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এসব প্রতিষ্ঠান বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি বিকাশ, এবং রপ্তানিমুখী সাপ্লাই চেইন গড়তে ভূমিকা রাখছে।

ভবিষ্যতে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, নতুন শক্তি, ডিজিটাল অর্থনীতি, লজিস্টিকস ও উৎপাদন খাতে চীনা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের আগ্রহ দিনকে দিন বাড়ছে।

তিনি উপসংহার হিসেবে জানান, ‘সঠিক নীতিগত সহায়তা পেলে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম রপ্তানি ও শিল্পকেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সব উপকরণই সাজিয়ে রাখতে পারে।’

পোস্টটি শেয়ার করুন