সোমবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

মেহেরপুরে স্কুল শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার ও ছাত্রীর বিয়ের দাবিতে মানববন্ধন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের সঙ্গে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশের সাথে সাথেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুলের সামনে মানববন্ধন করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা হিসেবে শিক্ষকের এমন অসদাচরণ সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল নাগাদ, যখন অশ্লীল কথাবার্তার ভিডিওটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আজ সোমবার, ১৬ নভেম্বর সকাল দশটায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুলের মূল গেটের সামনে মানববন্ধন করেন।

ভিডিওটি বেশ কয়েকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার হয়ে ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, আর যেখানে শিক্ষকের চরিত্রই যেখানে কলঙ্কিত হয়, সেখানে জাতি কেমন থাকবে তা ভাবতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। একজন প্রধান শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন অনৈতিক আচরণ নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় এবং এটি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য লজ্জার বিষয়।

অভিভাবকরা বলেন, স্কুলে পাঠাই আমাদের সন্তানদের শিক্ষাদানের জন্য, যেখানে শিক্ষকদের হয়ে তিনি যেন পিতার মত। কিন্তু এমন আচরণ মানা যায় না, তাই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করছি।

এক শিক্ষার্থী বলেন, দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জীবন, রাজু স্যার আমাদের বন্ধুর বাবা। তার সাথে সম্পর্ক ও অনৈতিক কাজ গর্হিত, যেন নিজের মেয়ের সাথে এমন কথা বলা বা কার্যকলাপ। আরেকজন বলে, রাজু স্যার আমাদের বান্ধবীর বিয়ে দিতে হবে, এক কোটি টাকায় কাবিনের চুক্তি করে দিতে হবে, যাতে দুদিনের মধ্যে তালাক না দিতে পারে।

শিক্ষার্থীর বাবার মন্তব্যে জানা গেছে, শিক্ষক রাজু আহমেদ কয়েক বছর আগে একটি এনজিও কর্মীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েছিলেন। এতোদিন তিনি এলাকায় নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। স্কুলের এই কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি আজীবন বহিষ্কার দাবি জানান।

প্রচেষ্টা করে শিক্ষক রাজুর সাথে যোগাযোগের হলে কল রিসিভ না করায় জানা যায়নি তার বক্তব্য। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তা পাঠানো হলেও তিনি জমা দেননি।

কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলম হোসাইন বলেন, শিক্ষক রাজুর ব্যাপারে নানা অভিযোগ শুনছি। এমন শিক্ষক থাকলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তারা উচ্চতর তদন্ত ও তার স্থায়ী বহিষ্কার দাবির পক্ষে। একই সঙ্গে গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, বিস্তারিত শুনেছি, তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসাইন বলেছেন, ঘটনাটি শুনেছি, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার যদি লিখিত অভিযোগ दे, তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারা চাইলে আদালতেও যেতে পারবেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন