কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা এলাকার কিংবদন্তি ঐতিহ্যবাহী কাবিলা শাহী জামে মসজিদ প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো। এটি ১৭৮৫ সালে (১২০৬ হিজরী) নির্মিত হয়েছিল এবং এখন পর্যন্ত তার ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন হিসেবে স্থান পেয়েছে। এই মসজিদটি এলাকার গর্বের সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে এবং ২০০৫ সালে পুনঃনির্মাণ করে এর সৌন্দর্য আরও আরও বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাবিলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র দুই শত গজ পশ্চিমে অবস্থিত এই মসজিদের কারুকার্য ও নির্মাণশৈলী দেখে কেউই এটি প্রাচীন মুঘল যুগের নির্মাণ বলে বিভ্রান্ত হতে পারেন। এক গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদটির প্রতিটি কোণে রয়েছে সুউচ্চ মিনার, যা এর দৃষ্টিনন্দনতা আরও বাড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, কাবিল মজুমদার এবং হাবিল মজুমদার নামে দুই ভাই ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী জমিদার। তারা ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও ধর্মপ্রাণ, মানবসেবায় নিবেদনপ্রিয়। তাদের দানকৃত সম্পত্তির ওপর গড়ে উঠেছে এই মসজিদ, পাশাপাশি নির্মিত হয়েছে মাদরাসা, স্কুল, বাজার ও কবরস্থান। তার মধ্যে অন্যতম দানই বর্তমান কাবিলা শাহী জামে মসজিদ। মসজিদের পাশে রয়েছে বিশাল এক দীঘি ও ঐতিহাসিক কাবিলা শাহী কবরস্থান, যা এখনও স্থানীয় মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে বিবেচিত।
সাবেক মোয়াজ্জেম ও সাংবাদিক কাজী মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, কাবিল মজুমদারই এই মসজিদের নামের উৎস। তিনি জমিদার হয়েও মানুষের কল্যাণে অনেক কিছু করেছেন। তার একজন বংশধর জানান, তিনি (মজুমদার) অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় ও মানবসেবায় নিবেদিতব্য ব্যক্তি ছিলেন, যার দানে এই স্থাপনা গড়ে ওঠে। তার মৃত্যুর স্থান বা কবরের সঠিক অবস্থান আজও অজানা, কিন্তু তার অবদান ও সৃষ্টিগুলো জীবিত থাকছে মানুষের কল্যাণে। কালের বিবর্তনে কাবিল গণের জমিদারি হারিয়ে গেছে, তার ব্যক্তিগত কোন ছবি বা জীবনবৃত্তান্ত নেই। তবে তার নির্মিত স্থাপনা ও অবদানই আজও স্মরণীয় হয়ে আছে।
অন্যদিকে, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সামছুল হক ভুইয়ার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে এই স্থাপনাগুলো পরম আদর ও সম্মানের সঙ্গে ধরে রাখা হয়েছে।





