জেলা নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনও ইচ্ছা নেই। তিনি বিস্তারিত বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভকে (সিএসসি) एक ওপেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উপযুক্ত আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে উন্নীত করা, যেখানে বাইরে থেকে চাপ বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই সহযোগিতা এবং সমঝোতা বাড়বে। এই নিরাপত্তা ফোরাম পারস্পরিক আস্থা, সুবিধা ভাগাভাগি এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে বলে তিনি ব্যক্ত করেন। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ভারতের ফরেন সার্ভিস একাডেমি সুষমা স্বরাজ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত সপ্তম নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে বাংলামূলে এই মন্তব্য করেন তিনি।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বলেন, মহাসাগর আমাদের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্য। এটি আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। সদস্য রাষ্ট্রগুলো অভিন্ন সামুদ্রিক মানচিত্র ভাগ করে নিয়েই শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে। তিনি আরও বলেন, ভারত এই এলাকায় একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ গড়তে নিজেদের ভূমিকা পালন করবে।
খলিলুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, প্রযুক্তি অগ্রগতি ও কৌশলগত প্রভাব—এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে জোর দেয় এমন মূল্যবোধ ও নীতিমালা অনুসরণ করতে, যা শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত মহাসাগর গঠনে সহায়ক। যেখানে স্বজনাধিকারের পাশাপাশি সার্বভৌমত্ব, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান জানানো হবে।
তিনি emphasize করেন, বাংলাদেশ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, শান্তি বজায় রাখতে এবং মানবাধিকার সংরক্ষণে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশ সিএসসির পাঁচটি মূল স্তম্ভের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, এবং এসবের মাধ্যমে অঞ্চলটির নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চায়।
অতিরিক্ত, তিনি বলেন, সামুদ্রিক ক্ষেত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ তার দায়িত্ব নিয়ে জলদস্যুতা, অবৈধ মাছধরা, সামুদ্রিক সন্ত্রাস ও অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বিগত দিনগুলোতে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে এবং জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার ও মিসইনফরমেশনের হুমকির মুখে পড়ার বিষয়টি উল্লেথ করেন তিনি। বাংলাদেশ এখন নিজের সাইবার নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রযুক্তি রক্ষায় কঠোর। শুধু নাগরিকের নিরাপত্তা নয়—এটি দেশের আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও অপরিহার্য।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তায় স্বচ্ছতা, বিশ্বাস ও সম্মানের ভিত্তিতে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর তিনি জোড় দেন। বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে একটি স্থিতিশীল, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে উঠতে পারে।
অবশেষে, তিনি উল্লেখ করেন যে, কেবল বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিই নয়, বরং কোনও কারণকে অন্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখানো যাবে না। সকল সমস্যা সমাধানে পারস্পরিক স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে অভিন্ন সমাধান খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তিনি প্রত্যাশা প্রকাশ করেন, এই সভা একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সংস্থার রূপান্তরে সহায়ক হবে।





