ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় কাজ করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার খসড়া হাতে পাওয়া গেছে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে এখনো জেলেনস্কির কার্যালয় থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। উপলব্ধি করা হচ্ছে, তিনি শান্তি অর্জন ও কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোয় আলোচনা চালিয়ে যেতে চান।
বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, এই ২৮ দফার পরিকল্পনায় ইউক্রেন কিছু ভূখণ্ড ও অস্ত্রও অবকাশ করতে হতে পারে। মার্কিন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশিয়ার কাছে পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হবে, এর পরিবর্তে ইউক্রেন ও ইউরোপ রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকির থেকে নিরাপদ থাকবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই পরিকল্পনা নিয়ে এক মাস ধরে কাজ করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এই বিষয় নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট নিশ্চিত করেছেন, বিভিন্ন পক্ষের মতামত নেওয়া হচ্ছে এবং এই প্রস্তাবের বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি বলেছিলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষের জন্যই এই পরিকল্পনা সুবিধাজনক বলে মনে হয়।
অন্যদিকে, জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি মার্কিন আর্মি সেক্রেটারি ড্যানিয়েল ড্রিসকলের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তবে, রাশিয়া এই উদ্যোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, একাধিক আলোচনা বা যোগাযোগের খবর থাকলেও এখনো কোনো ব্যাপারে অগ্রগতি হয়নি।
এদিকে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। জেলেনস্কি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনা করতে চাইলেও ইউরোপীয় মিত্ররা এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, শান্তি মানে আত্মসমর্পণ নয়। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরও বলছেন, শান্তির জন্য ইউরোপ ও ইউক্রেনের পূর্ণ সমর্থন প্রয়োজন।
অবশ্য, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ আক্রমণে দেশটির সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। এর মধ্যেও, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়ে জেলেনস্কি কয়েক দফা চাপের মুখোমুখি। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, চলতি বছর রুশ সেনারা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। তবে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা বলছে, প্রকৃত দখলকৃত এলাকা তার চেয়ে কম।





