বিমা আইনের সংশোধনী প্রস্তাবের আওতায় যে ধারা ও উপধারা সংযোজন করা হয়েছে, সেগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হলে বিমা শিল্পের নিয়ন্ত্রণে একজন দক্ষ ও চৌকস কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই খাতের উন্নয়ন ও সুসংগঠনের জন্য প্রথমে প্রয়োজন আইডিআরএর ব্যাপক সংস্কার। এই মত প্রকাশ করেন তারা শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায়। এ সভার আয়োজন করে বিমা বিষয়ক প্রামাণ্য প্ল্যাটফর্ম ইনসিউরেন্স নিউজ বিডি।
সুলতান-উল-আবেদের উপস্থাপনায় মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১০ সালে নির্মিত বিমা আইনের সংশোধনীর প্রয়োজন কেন হলো তা স্পষ্ট নয়। কারণ, ২০১০ সালে গঠিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বর্তমানে নানা সমস্যার মুখোমুখি, বিশেষ করে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা কম এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ সময় তারা বদলি হয়ে যান এবং তাদের দায়িত্ব পালনে দক্ষতা না থাকায় পুরো ব্যবস্থাপনাই ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে, আইন প্রয়োগে নানা অসুবিধার মুখোমুখি হচ্ছে এই খাত।
সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, ২০১০ সালের বিমা আইনের মধ্যে থাকা ১৬০ ধারার মধ্যে বেশিরভাগই অপরিবর্তিত রয়েছে, তবে এর উপধারাগুলোর সংস্কার প্রয়োজন। মূল কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন বা বাতিলের প্রস্তাব এসেছে, আর ৬৪টি নতুন ধারা ও উপধারা যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিবর্তনের পেছনে যথেষ্ট বিশ্লেষণ বা পর্যালোচনা হয়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা।
সুলতান-উল-আবেদীন বলেন, মূলত আইডিআরএর বর্তমান অবস্থা, কর্মীবোর্ড ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার অবস্থা দেখে মনে হয়, তাদের দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে। আইডিআরএ কেবল নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া উচিত নয়, এটি একটি উন্নত ও জনবান্ধব সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে হবে। এই খাতের বিকাশের জন্য প্রয়োজন না শুধু আইন সংশোধন, বরং বৃহত্তর সংস্কার এবং নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা বৃদ্ধি।
বক্তারা আরও জানান, একজন উন্নত ও সমৃদ্ধ বিমা খাতের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় হয়। সেজন্য সব নাগরিকের জন্য বিমাকে সহজলভ্য ও সাধারণ পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। যা বিমার মাধ্যমে সুবিধা পেতে সহায়ক হবে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিমাকারী ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার একে অন্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আইন অবশ্যই জনবান্ধব ও সহজবোধ্য হতে হবে এবং এই খাতের অগ্রগতি ও জনপ্রিয়তা নিশ্চিত করতে হবে।





