বাংলাদেশ সরকার ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের সুরক্ষা ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। এর ফলে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি বন্ধ হয়ে যায় বা অবসায়ন হয়, তবে আমানতকারীরা তাদের সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা সরাসরি ফেরত পাবেন। এই সিদ্ধান্তের/get নির্দেশনা গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স বিভাগ (ডিআইডি) কর্তৃক জারি করা হয়।
নির্দেশনায় জানানো হয়, আমানতকারীর অর্থের সুরক্ষা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার জন্য এই আইন কার্যকর করা হয়। সংসদ ভেঙে যাওয়ার কারণে জরুরি অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশটি জারি করেছেন, যা ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০-এর পরিবর্তে নতুন আধুনিক আইন কার্যকর করেছে।
নতুন আইনের মূল লক্ষ্য হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা সাধারণ আমানতের নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত ফেরত দেওয়া। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে আলাদা একটি ‘অমানত সুরক্ষা বিভাগ’ গঠন করা হবে, যা প্রিমিয়াম সংগ্রহ, তহবিল পরিচালনা, সদস্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, আমানত পরিশোধ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
আইন অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি পৃথক আমানত সুরক্ষা তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে। এই তহবিল হবে প্রিমিয়াম, জরিমানা, বিনিয়োগ আয় ও অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে। তহবিলের ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড করবে, যা একটি ট্রাস্টি বোর্ড হিসেবে কাজ করবে।
নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। বর্তমানে কার্যরত সব ব্যাংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই সদস্যপদে অন্তর্ভুক্ত হবে, আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৮ সালের ১ জুলাই থেকে সদস্য হবেন। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ঝুঁকি-ভিত্তিক প্রিমিয়াম আদায়ের নিয়মও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সরকারি, বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কিছু বিশেষ আমানত এই সুরক্ষার আওতার বাইরে থাকবে। তবে সাধারণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই সুরক্ষা সীমার মধ্যে রক্ষা পাবে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি অবসায়ন বা রেজোলিউশনের মুখোমুখি হয়, তবে এই আমানতকারীরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা দ্রুত পাবেন। প্রয়োজন পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্রিজ ব্যাংক বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এই টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে।
বেক্সির পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলা, বিদেশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, তথ্য বিনিময় ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়ার ক্ষমতা পেয়েছে, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ।





