বৃহস্পতিবার, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

শ্রমিক পাঠিয়ে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুটের অভিযোগ

মালয়েশিয়া বাণিজ্যিক শ্রম বাজারে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থপাচারের অভিযোগে বিশেষ নজরদারির হাতে এসেছে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক জরুরি ঘোষণায় জানায়, মালয়েশিয়ায় শ্রম পাঠানোর নামে কেবলমাত্র সরকারের নির্ধারিত ফি থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করে মোট ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা অর্থ সরকার ও শ্রমিকদের থেকে আত্মসাৎ ও পাচার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জরুরি তদন্ত শেষে ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মোট ৬০টি পৃথক মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, তদন্তে দেখা গেছে, ১২৪ জনের বিরুদ্ধে এসব মামলায় মোট ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জন শ্রমিকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়েছে। অভিযুক্ত এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা এজেন্সিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, যারা চুক্তিতে নির্ধারিত ফি থেকে অনেক বেশী আদায় করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়া রিক্রুটমেন্টের জন্য সরকারি নির্ধারিত খরচ ছিল ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা চুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক প্রভাব এবং বায়রার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা ব্যবহারে এই খরচ বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। শ্রমিকদের বাছাই, অর্থসংক্রান্ত প্রক্রিয়া এবং চুক্তি শর্তাবলি উপেক্ষা করে টাকা আদায় করা হয়েছিল।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, এই অনিয়মে জড়িয়ে থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১২৭(বি), ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক), ৪২০ ও ৪০৯ ধারা। এর আগে, একই ধরনের অভিযোগে ৪০টি বিদেশি কোম্পানির মালিক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আরও ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত চলছে। সব মিলিয়ে, এই ঘটনায় মোট ১০০টির বেশি মামলা দায়ের হয়েছে, যেখানে অভিযুক্তের সংখ্যা ২৩২ জন এবং আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৮৪ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা।

পোস্টটি শেয়ার করুন