শনিবার, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান

দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর নির্বাসনের পর, এই ডিসেম্বর মাসের ২৫ তারিখে তিনি দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই ঐতিহাসিক ফিরে আসার মাধ্যমে দেশজুড়ে গণতন্ত্রের পথে যে সব বাধা সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলো দূর হবে বলে দলের নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে গুলশানে বিএনপি ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই খবর জানান।

সরকারি ওয়েবসাইটে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সংবাদ প্রসঙ্গে নানা আলোচনা চলছিল এই মুহূর্তে, যেখানে ফখরুলসহ দলের শীর্ষ নেতারা এই প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তৃতায় মহাসচিব বলেন, দেশের সব নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জানাতে চান—আমাদের নেতা খুব শিগগিরই খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু খবর নিয়ে আমাদের মাঝে আসবেন। তিনি বলেন, যখন তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন, তখন দেশপ্রেমিক প্রত্যেকের হৃদয় কম্পিত হবে এবং আকাশের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১৮ বছর নির্বাসন শেষে তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরে আসছেন। এই মানুষটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন প্রকৃত নেতা, যিনি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দলের নেতৃত্বে আছেন। তিনি দেশে ফিরে আসলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও পরিবর্তনশীল হয়ে উঠতে পারে—এমনটাই মনে করেন দলের নেতারা।

বৈঠক শেষে, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, দলের একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন, তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন এবং নিজ হাতে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি কেবল ব্যক্তিগত বা পারিবারিক নয়, এটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।

59 বছর বয়সী তারেক রহমান ২০০৮ সালে, বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শাসনের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে লন্ডনে যান। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং ধীরেধীরে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আসীন হন।

২০১৮ সালে তার মা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর, তাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে আল্প করা হয়। তখন থেকেই তিনি দল পরিচালনা করছেন ভার্চুয়ালি—সভার ও সমাবেশের মাধ্যমে।

অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা থাকলেও, ২০২২ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের পর তাকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বিলম্বিত নেই।

নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও, বিভিন্ন পর্যায় থেকে জানানো হচ্ছে, শিগগিরই তিনি ফিরবেন। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময়েও বিষয়টি হতাশায় পরিণত হয়নি; বরং, দলের নেতারা বিশ্বাস করেন, তার ফেরার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তম পথে যাবে। তারেক রহমানের ফোনে স্ক্রিনশট এবং পোস্টে স্পষ্ট হয়েছে, তিনি করোনার মধ্যে দেশের মানুষের ভেতর ফিরে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিএনপি নেতারা এই প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাচ্ছেন, এবং মনে করছেন, এটি দেশের গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

পোস্টটি শেয়ার করুন