মরক্কোর আটলান্টিক উপকূলীয় প্রদেশ সাফিতে প্রবল বর্ষণে সৃষ্টি হওয়া আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। বার্তা সংস্থা এসএনআরটি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১৫ ডিসেম্বর) হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। এই বন্যায় কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ও ছবি দেখিয়ে দেখা যায়, পানিতে ও কাদায় ভেসে গেছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ও আবর্জনা। রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাফি শহরে মাত্র এক ঘণ্টার প্রবল বর্ষণে পুরোনো ঐতিহাসিক এলাকা সহ অন্তত ৭০টি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। সাফি গভর্নরেটের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নাগরিক নিরাপত্তা ও সরঞ্জাম নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চালু আছে। বন্যার কারণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উপকূলীয় এই বন্দরনগরীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কাসাব্লাঙ্কাভিত্তিক পত্রিকা ‘লে মাতাঁ’ জানায়, সাফি থেকে উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হরারা শহরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়ক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি, সাফির প্রাদেশিক শিক্ষা অধিদপ্তর সোমবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। রোববার সন্ধ্যার মধ্যে বন্যার পানি কমতে শুরু করে এবং এলাকাগুলোর মানুষ নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উদ্ধার করতে দেখা যায়। এখনো হতাহতদের খোঁজে উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় আবহাওয়া বিভাগ আগামী মঙ্গলবার দেশের নানা অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। দীর্ঘ সাত বছর খরা চলার পর মরক্কো বর্তমানে ভারী বর্ষণ ও আটলাস পাহাড়ে তুষারপাতের মুখে পড়েছে, যার কারণে দেশের বেশ কিছু জলাধার ইতিমধ্যে শুকিয়ে গেছে। মরক্কোর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ২০২৪ সাল ছিল দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। এর আগে ২০২১ সালে ভারী বর্ষণে বন্যা ঘটলে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল, এবং ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অতি বর্ষণের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে ছিল।





