দেশের বিমানবন্দরগুলোতে আরও উন্নত ও নির্ভুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে विभागটি উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন ‘এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন’ (ইটিডি) মেশিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, যার আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২৫টি এ আধুনিক মেশিন কেনা হচ্ছে। এগুলো রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে পর্যায়ক্রমে স্থাপন করা হবে।
বেবিচকের সূত্রে জানা গেছে, ইটিডি হলো এক ধরনের উন্নত জেনারেটর যন্ত্র, যা লাগেজ বা যাত্রীর কাছ থেকে উদ্ধার করা অণু ও রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করে বিস্ফোরকের উপস্থিতি শনাক্ত করতে সক্ষম। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে লাগেজ না খুলেই নির্ভুলভাবে বোমা বা বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত সম্ভব। নিরাপত্তাকর্মীরা যাত্রীর হাত, কাপড়, জুতা, ব্যাগ বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সরাসরি মেশিনে প্রবেশ করান। এরপর কিছু সেকেন্ডের মধ্যেই মেশিনটি টিএনটি, আরডিএক্স, পিইটিএন, নাইট্রেট ও পারঅক্সাইডভিত্তিক বিভিন্ন বিস্ফোরকের উপস্থিতি শনাক্ত করে। যদি বিস্ফোরকের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, মেশিনের স্ক্রিনে সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতা বা অ্যালার্ম বাজে।
বেবিচকের একজন কর্মকর্তা, এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান, বলেন, ‘বিমানবন্দরে এই মেশিনের চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা চলছে। অতীতে কিছু বিমানবন্দরে এই ধরনের মনিটর ছিল, কিন্তু তা এখন অকার্যকর। তাই নতুন করে এটি স্থাপন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, সাধারণ এক্স-রে স্ক্যানার বা মেটাল ডিটেক্টর অনেক সময় ক্ষুদ্র বিস্ফোরক কণা ধরতেই অপারগ, কিন্তু ইটিডি এই বিষয়টি সহজেই শনাক্ত করে।
বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী ও ফ্লাইটের চাপ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে এই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আরও প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। যাত্রী সুবিধার জন্য বলা হয়েছে, কেবল সন্দেহজনক বা সংশয়যুক্ত ক্ষেত্রেই এই পরীক্ষা চালানো হবে, যাতে সাধারণ যাত্রীর ভোগান্তি না হয়। পাশাপাশি, এই প্রযুক্তি পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে ধৈর্য্য ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।





