এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে তাদের প্রথম টেকসই সংযুক্ত ঋণ সুবিধা হিসেবে এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের সঙ্গে ৩ কোটি ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই ঋণটি পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন এবং আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ হবে, যা গার্মেন্টস শিল্পে নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এডিবি জানিয়েছে, এটি বাংলাদেশে এডিবির প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ। এই ধরনের ঋণ হল ভবিষ্যৎমুখী ও পারফরম্যান্সভিত্তিক—a অর্থাৎ নির্ধারিত কর্মক্ষমতার সূচক এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের অগ্রগতি অনুযায়ী ঋণের শর্তসমূহ নির্ধারণ করা হয়।
এনভয়ের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কারखানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো।
ঋণের অর্থ ব্যয় করা হবে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়ায় নতুন স্পিনিং ইউনিট নির্মাণ ও পরিকল্পনায়, যেখানে বছরে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৫০ টন সুতা উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এই নতুন ইউনিটটি মূলত ডেনিম তৈরিতে ব্যবহৃত হবে, যা সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও জ্বালানি সাশ্রয়ী হবে। এছাড়াও, কারখানার ছাদে ৩.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর প্যানেল বসানো হবে ও স্বল্পমেয়াদি স্থানীয় মূলধন পুনঃঅর্থায়নের জন্য অর্থের ব্যবহারে সহায়তা দেবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি জোগান দেয়। এনভয় দেশের অন্যতম শীর্ষ ডেনিম প্রস্তুতকারী এবং এডিবি অত্যন্ত গর্বিত যে এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ পাচ্ছে। এটি পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গার্মেন্টস শিল্পে নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করবে।’
এনভয়ের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এডিবির এই সহযোগিতা আমাদের জন্য গর্বের। এই সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে এবং পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা মান, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এনভয় বর্তমানে বছরে ৫ কোটি ৪০ লাখ গজ ডেনিম উৎপাদন করে, যা দেশের মোট সক্ষমতার প্রায় ১০ শতাংশ। তারা বিশ্বের প্রথম প্লাটিনাম লিড সার্টিফায়েড ডেনিম কারখানা, যা মার্কিন গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের স্বীকৃত।
এই কারখানা ময়মনসিংহে ৪৫ একর জমির ওপর স্থাপিত এবং এটি সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২০১২ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডেনিম কারখানা, যেখানে রোডাইং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
এটি একটি ব্যাকওয়ার্ড ইন্টিগ্রেটেড কারখানা, যার নিজস্ব স্পিনিং সুবিধা রয়েছে এবং প্রতিদিন ৭০ टন সুতা উৎপাদনে সক্ষম।