রবিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

পাট খাতের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য ও বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দেশ আগে পাট শিল্পে ঘটে যাওয়া ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাট খাতের অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি বস্ত্র এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খাতে হবে না।

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, “পাট শিল্পে অতীতে নানা ধরনের অদক্ষতা, অযোগ্যতা, দুর্বৃত্তায়ন এবং পরিচালনাব্যবস্থার কারণে এই শিল্প সংকটের মুখে পড়ে। অনেক স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল ছিল না। কিছু অর্জন না করেই ভুল স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল।”

তিনি আশ্বাস দেন যে, পাট শিল্পের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন থেকে বস্ত্র শিল্পে সেই ভুলগুলো পুনরায় করবে না। তিনি বলেন, “আমরা আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বাস্তবতার ভিত্তিতে হবে।”

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রকল্পের প্রচেষ্টায় আয়োজিত ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০২৫’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। এই সেমিনারের শিরোনাম ছিল ‘রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড রেইনভেনশন: ক্রিয়েটিং স্কিল্ড প্রফেশনালস ফর দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল সেক্টর অব বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাট সচিব বিলকিস জাহান রিমি।

এবারের জাতীয় বস্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বস্ত্র শিল্পের প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’। এই অনুষ্ঠানে বক্তারা উল্লেখ করেন, দেশের বস্ত্র খাত বর্তমানে শুধু একটি শিল্প নয়, এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। এই খাত দেশের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “আমরা লক্ষ্য রাখছি ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি অর্জনের। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য শিল্প, একাডেমিয়া এবং নীতিনির্ধারকদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সক্ষমতা অর্জন না করলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করা জরুরি। মধ্যপ্রাচ্যের কাছে ক্রুড অয়েল থাকলেও আমাদের আছে ১৮ কোটি মানুষের মানবসম্পদ। এই মানবসম্পদকে দক্ষ করে তুললে বস্ত্রশিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত খুলবে।”

পরিবেশ বান্ধব পাটের ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতের ব্যাপারে তিনি উল্লেখ করেন, সরকার একটি বড় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ১ হাজার ৬০০ এর বেশি উদ্যোক্তাকে নিয়ে জলবায়ু তহবিলের আওতায় একটি রিভলভিং ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এই ফান্ড থেকে পাটপণ্য সংগ্রহ করে পুনরায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা বাজারে সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করছে।

অতিরিক্তভাবে তিনি জানিয়েছেন, এবারে বাণিজ্য মেলায় ১০ লাখ পাটের ব্যাগ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাটের ব্যাগকে আবার মূলধারায় ফিরিয়ে আনাই সরকারের মূল লক্ষ্য।

পোস্টটি শেয়ার করুন